মানসিক লক্ষন
প্রবাদে বলা হয়, কান টানলেই মাথা আসে। অনুরূপ রাজ্যের রাজা যদি বশ্যতা স্বীকার করে তবে প্রজা বা অধীনস্থ সবাই সহজেই অনুগত হয়। যে কোনো বিষয়ের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ আপনার আয়ত্তাধীন হলে চাহিদা মতো সুবিধা গ্রহণ সম্ভব হয়।
হোমিওপ্যাথি দর্শনও রোগীর রোগ আরোগ্যে কেন্দ্রীয় লক্ষন তথা মেন্টাল সিম্পটমকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ রুপে মূল্যায়ন করে। হোমিওপ্যাথি রাজ্যে রোগ ও রোগীর যে অভূতপূর্ব সংজ্ঞা নিরূপণে সমর্থ হয়েছে, যার মূল ভিত্তি মানবদেহের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণের উপর নির্ভর করে রোগীর আরোগ্যের গতিপথ অনুসরণ হয়।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকগনের চিকিৎসা কার্য পরিচালনার সংবিধান গ্রন্থ অর্গানন অফ মেডিসিনের সূত্র এগারো তে বিজ্ঞানী হ্যানিম্যান রোগী সম্বন্ধে বিস্তারিত, যৌক্তিক ও জ্ঞানগর্ব আলোচনা করেছেন।
আমরা যখনই কেহ রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ি, মূলত: এ রোগাক্রমণ কার উপর? তার বাস্তব প্রমাণ , প্রাকৃতিক নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ স্পষ্ট ও সূক্ষ্ম বৈশিষ্ট্য অর্গাননের সূত্র এগারো ও সপ্তম পাদটীকার পরতে পরতে অনুসন্ধান করে আমরা সুনিশ্চিত ও অবিচল সিদ্ধান্তে পৌঁছতে সক্ষম হই। কোনো মানুষ যখনই রোগাক্রান্ত হচ্ছে তা অপার্থিব স্বয়ংক্রিয় জীবনীশক্তির (vital force) উপরই আক্রান্ত হয়, যা সমগ্র দেহের সর্বত্র সমানভাবে সর্বদাই বিদ্যমান রয়েছে। এই জীবনীশক্তিই প্রথম রোগ (Disease) উৎপাদন শক্তির অদৃশ্য (Dynamic Energy) প্রভাব কর্তৃক প্রভাবান্বিত হয়ে বিশৃঙ্খলিত হয়। ফলে জীবনীশক্তি বিশৃঙ্খলিত হয়ে এমন একটি অস্বাভাবিক অবস্থায় পরিনত করে যে, শরীরে বিরক্তিকর অনুভূতিসমূহ প্রকাশ ও বিশৃঙ্খল কার্যকলাপে অনুপ্রেরণিত করে, সামগ্রিক এই অবস্থাকে আমরা রোগ বলে সম্বোধন করে থাকি।
ইতিপূর্বেই দেহে একটি শক্তি ( vital force) অদৃশ্য অবস্থায় বিরাজমান। যা শুধুমাত্র বিভিন্ন ক্রিয়া এবং তাতে রোগাক্রান্ত বিশৃঙ্খল অনুভূতির প্রকাশ ও শরীরের সংশ্লিষ্ট অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কার্যকলাপে অসুস্থতা জনিত লক্ষন প্রকাশের মাধ্যমেই কেবল আত্মপ্রকাশ করে। অদৃশ্য জীবনীশক্তির এরূপ অপ্রত্যাশিত আত্মপ্রকাশে গভীর পর্যবেক্ষণশীল চিকিৎসক চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জেনে নিতে সক্ষম হয়। বিকল্প কোনো পদ্ধতিতে অদৃশ্য জীবনীশক্তির অসুস্থতাজনিত অবস্থা জানার সুযোগ নেই। সুতরাং যিনি (vital force)-অসুস্থ প্রকৃত বুদ্ধি ও বিবেকের বিচারে তারই চিকিৎসা প্রয়োজন। হোমিওপ্যাথি দর্শন রোগীর আরোগ্যে ও রুগ্ন মানুষের হারানো স্বাস্থ্যের পূণ:প্রতিষ্ঠায় এই অভ্রান্ত মৌলিক নীতিমালার উপরই সুপ্রতিষ্ঠিত।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন